সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা


সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিনসরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আপনি হয়তো অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু সঠিক তথ্য খুঁজে পাচ্ছেন না। চিন্তার কোন কারণ নেই আজকে আমরা সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করছি।
সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা
আপনি যদি সত্যিই রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে মনোযোগ দিয়ে আমাদের এ আর্টিকেলটি পড়তে হবে। আজকে আমরা আলোচনা করছি সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা নিয়ে। এছাড়াও আরো অনেক টপিকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত জানতে পুরো আর্টিকেলটি পড়ার অনুরোধ রইলো।

ভূমিকা

আদিকাল থেকে গ্রাম বাংলার মানুষের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে সরিষার তেলের নাম। ঔষধি গুনসম্পন্ন হওয়ায় প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই সরিষার তেল। সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক।

আবার রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতার কোন বিকল্প নেই।গবেষণায় দেখা যায় ওমেগা আলফা 3, ওমেগা আলফা 6 ফাটি এসিড, ভিটামিন ই এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর তেল হিসেবে পরিচিত।

রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা

চোখ জুড়ানো হলুদ চাদরের ঢাকা গ্রাম বাংলার প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে সরিষা ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ। যার বীজ থেকে মেলে সুঘ্রাণে ভরা ভরপুর তেল। সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আপনি হয়তো অনেক চিন্তিত। আবার আপনি রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা নিয়েও ভাবছেন।

ভাবনার কোন কারণ নেই এর সমাধান নিয়েই আমরা এসেছি। যে কোন ভর্তাকে সুস্বাদু করা ছাড়াও নানা পদের তরকারি সাদকে বাড়িয়ে তুলছে সরিষার তেল। থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, নিয়াসিন, ফোলেট, পাইরিডস্ক্রিনও পলি কুইননের মত ভিটামিন মিলে সরিষার তেলে।

শাসনালী মূত্রনালী ও ব্রোনকাইটিস ও কোলনি ইনফেকশন সাড়াতেও কার্যকরী এই সরিষার তেলটি। পেশি যন্ত্রনা কমানোর পাশাপাশি ঠান্ডা লাগা, পিঠে ব্যথা, এমনকি জ্বরের প্রবণতা কমাতেও কাজ করে এই তেলটি। প্রত্যেকটা রান্নাকে অতুলনীয় সুন্দর করতে সাহায্য করে এই সরিষার তেল।

সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

বাংলাদেশের সরিষার তেল অনেক জনপ্রিয়। সরিষার তেল আমরা সাধারণত ভর্তা তৈরিতে ও সর্দি কাশি ভালো করতে গায়ে মেখে থাকি। তবে আমরা অনেকেই জানিনা যে রান্নায় এবং চিকিৎসায় সরিষার তেল ব্যবহার করা হয়। রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতা অপরিসীম। সরিষার তেলের সুগন্ধ রান্নার স্বাদ বাড়াই।
হৃদ রোগ জনিত জটিলতার কারণে বিশ্বের অনেক মানুষ মারা যায়। সরিষার তেলে থাকা মনোসেচুরেস্টেড ফ্যাটি অ্যাসিড কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায় ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমায়। গবেষণায় দেখা গেছে সরিষার তেলে থাকা ওমেগা 3 পলিঅ্যান্ডসেচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। সরিষার তেল রান্নায় ব্যবহার করলে শতকরা ৫০ ভাগ টিউমারের আশঙ্কা কমে যায়।

সরিষার তেলে থাকা এন্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান হজম শক্তি উন্নত করে ও দাঁতের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। সরিষার তেলের যেমন উপকার রয়েছে তেমন ক্ষতিও কিন্তু রয়েছে। 35 থেকে 40% ইউরিক অ্যাসিড থাকায় কিডনির জন্য হয় ক্ষতি করে এই সরিষার তেল।

যে কারণে আমেরিকার সহ ইউরোপে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই সরিষার তেলের ব্যবহার। সরিষার তেলে ইউরিক এসিডের মাত্রা বাড়াই। ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চমাত্রা গাউড এবং কিডনিতে পাথরের মত সমস্যার কারণ হতে পারে এই সরিষার তেলটি।

ত্বকে সরিষার তেলের উপকারিতা

সরিষার তেল ত্বকের তামাটে ভাব ও দাগ দূর করে এবং ত্বককে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করতে পারে। এই তেল ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশনি থেকে এবং অন্যান্য দূষিত পদার্থ থেকে সুরক্ষা করে। সরিষার তেল খুব ঘন হয় এবং এতে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ই থাকে। ভিটামিন ই বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দূর করতে সাহায্য করে। 

শুষ্ক ঠোটের যত্নে সরিষার তেল ভালো কাজ করে। মাড়ির বিভিন্ন রোগ দূর করতে লবণ ও সরিষার তেল ভালো ব্যবহার করা হয়। ত্বকের ওপর এই তেল দিয়ে মেসেজ করলে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দূর হয়। সরিষার তেল চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। অকালে চুল সাদা হওয়া রোধ করে ও চুল পড়া কমায়।

বিশেষ করে উচ্চমাত্রার বিটা ক্যারোটিন থাকে এতে বিটা ক্যারোটিন ভিটামিন এতে রূপান্তরিত হয়ে চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। রাতে চুলে সরিষার তেল মালিশ করে লাগালে চুল কালো হয়। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এ তেল মালিশ করুন চুল এবং মাথার তালুতে যা আপনার চুল পাকা রোধ করবে।সরিষা তেলের পুষ্টি উপাদান ভিটামিন, মিনারেল চুলের অকালপক্কতা রোধ করে থাকে।বাহিকভাবে শরীরে মালিশ করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়।

কাঁচা সরিষার তেল খেলে কি হয়

সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আপনি অনেক চিন্তিত। চিন্তার কোন কারণ নেই সরিষার তেলের যেমন উপকার আছে তেমন ক্ষতিও আছে। রান্নায় সরিষার তেলের উপকারিতার কোন বিকল্প নেই। রান্নার সাদকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় এই সরিষার তেল।

সরিষার তেলে এরোসিস এসিড নামের একটি যৌগ রয়েছে। যা এক ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এটি হৃদপিন্ডের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। সরিষার তেল স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। কারণ এতে উচ্চমাত্রার এরোসিস এসিড পাওয়া যায়। সরিষার তেল নিয়মিত খেলে হৃদপিণ্ডের রোগ হতে পারে। সরিষার তেলের অনেক উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও খাবার হিসেবে ব্যবহার না করাই উত্তম।

সরিষার তেল খেলে কি ওজন বাড়ে

অবশ্যই সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। রান্নায় তেল ব্যবহার ওজন বাড়ায় বলে মনে করা হয়। কিন্তু এমন তেল ও আছে যা ওজন কমাতেও পারে। অবাক হওয়ার কিছুই নেই বাঙালির চিরোচেনা সরিষার তেলেই আছে এমন কিছু উপাদান যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

পুষ্টিবিদদের মতে সরিষার তেলে এমন কিছু উপাদান আছে যা খাদ্যের বিপাক হার বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়া সরিষার তেলে আছে ওমেগা 3,ওমেগা 6 ফ্যাটি অ্যাসিড। এতে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকে তেমন শরীরে ভালো ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ে।

এর ফলে অতিরিক্ত ওজন বাড়ে না। নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন। ওজন নিয়ন্ত্রণ ছাড়াও অবশ্যই সরিষার তেলের আরো অনেক গুণ রয়েছে। সরিষার তেল কোলেস্টোরেলের মাত্রা ও নিয়ন্ত্রণ করে।

লেখক এর মন্তব্য

আমার মতে সরিষার তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা যেমন রয়েছে তেমন ক্ষতিও রয়েছে। রান্নাই সরিষার তেলের উপকারিতা অপরিসীম। সরিষার তেলে এক ধরনের ফ্যাটি এসিড থাকে যা হৃদপিণ্ড মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। অন্যদিকে সরিষার তেল ওজন কমাতে সাহায্য করে।

তবে সরিষার তেলের ক্ষতিকর দিকে থেকে উপকারিতা অনেক বেশি। কিন্তু সরিষার তেল রান্নায় ব্যবহার না করাই ভালো। আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি যদি একটু উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে নিজের কমেন্ট বক্সে একটা কমেন্ট করে জানাবেন অথবা শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url